Friday, October 10, 2014

বয়সের সাথে টাক হওয়ার রিলেশন

বয়স বাড়তে থাকলে মাথার চুল পড়ে গিয়ে টাক হয়ে যান অনেকেই। ৬০ বছর বয়স হতে না হতেই দেখা যায় প্রায় প্রতি তিনজন পুরুষের মধ্যে দুজন এবং প্রতি পাঁচজন নারীর মধ্যে দুজন চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন। কিন্তু এ সমস্যার কারণ কী? সম্প্রতি প্রযুক্তি ও ব্যবসা বিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডারে এই বুড়ো বয়সে টাক হওয়ার বিষয়টি নিয়ে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, বয়সের সঙ্গে টাক হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। নানা কারণে চুল ঝরতে শুরু করে। অসুস্থতা, চিকিত্সা, কিংবা ঘন ঘন চিরুনি ব্যবহারের অভ্যাসে চুল বেশি ঝরে। তবে নারী ও পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই চুল পড়ার মূল কারণ হচ্ছে অ্যান্ড্রজেনিক অ্যালোপিসিয়া। এর কারণে মাথার চুল পাতলা হতে শুরু করে এবং একসময় পুরোপুরি টাক হয়ে যায়। এটি পুরুষের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। অনেকেই আবার চুল পড়ার জন্য মা-বাবাকে দায়ী করেন। প্যাটার্ন টাক বা বা নির্দিষ্ট নকশাকারে চুল পড়ার ধরণটি অনেকটাই বংশগতির সঙ্গে সম্পর্কিত। প্রাথমিকভাবে চুল পড়ার জিনটি আসে এক্স ক্রোমোজোম থেকে যা সন্তান মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। কিন্তু টাক পড়ার জন্য মায়ের ওপর সম্পূর্ণ দোষ দেওয়া যায় না। এক্ষেত্রে অন্যান্য কারণও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাবার টাক থাকলে সন্তানেরও টাক হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তবে সুখবর হচ্ছে যাঁরা স্টাইল করার জন্য মাথায় টুপি পরেন বা চুলে অন্যান্য পণ্য ব্যবহার করেন তাদের এ কারণে টাক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা কম। শ্যাম্পু করা, খুশকি থেকে মুক্তির জন্য মাথা ধুয়ে ফেলার কারণে টাক হয় না। তবে হেয়ার আয়রন বা অতিরিক্ত চিরুনির ব্যবহারে চুল পড়ার গতি বেড়ে যায়। ভিডিও দেখার লিংকটি পাওয়া যাবে বিজনেস ইনসাইডার (http://goo.gl/ZTy26H ) ওয়েবসাইটে। এর আগে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্ম ও যৌন বিভাগের প্রধান রাশেদ খান চুল উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে জানান, ছেলেমেয়ে সবাই চুল ওঠার শিকার হতে পারেন। চুল প্রতি মাসে আধা ইঞ্চি করে বড় হয়। স্বাভাবিকভাবে একটি চুল দুই থেকে চার বছর পর্যন্ত বড় হতে থাকে। এরপর বৃদ্ধি কমে যায় এবং কয়েক দিনের মধ্যে আপনা-আপনি পড়ে যায়। সাধারণত খুশকি, অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন, দুশ্চিন্তা ও চুলে বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করার জন্য চুল পড়ে থাকে। অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন পুরুষের টাকের সবচেয়ে বড় কারণ। যাদের শরীরে এই হরমোনের প্রভাব বেশি, তাদেরই বেশি করে চুল পড়ে। এ ছাড়া ছত্রাক সংক্রমণ বা খুশকি হলো চুল পড়ার অন্যতম কারণ। সে ক্ষেত্রে ছত্রাকরোধী শ্যাম্পু চুলে ব্যবহার করতে হয়। এর জন্য ওষুধ খেতে হতে পারে। সংক্রমণ ভালো হয়ে গেলে চুল আবার গজায়। শরীরের পুষ্টির ওপর চুলের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। দৈনিক খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, খনিজ ও ভিটামিন পরিমিত পরিমাণে না থাকলে চুল পড়ে যায়। এ ছাড়া শরীরে দীর্ঘদিন কোনো একটি উপাদানের অভাবে চুল পড়ে। চুলের বিশেষ কোনো স্টাইলের জন্য যদি দীর্ঘদিন খুব টেনে চুল বাঁধা হয় বা টাইট করে খোঁপা বা ব্যান্ড করা হয়, তবে এ ধরনের চুল পড়া শুরু হয়। দীর্ঘদিন এক রকম চুল বাঁধার কারণে চুল পড়া পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরে যায় না। ফলে টেনে বাঁধার কারণে এ চুল পড়া স্থায়ীভাবে চুল পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। খুব বেশি পরিমাণে চুল রঙিন করার প্রসাধন, চুল সোজা করা বা ক্রমাগত রিবন্ডিং করলে চুল পড়ার হার বেড়ে যায়। চুল পড়া রোধ বা কমাতে হলে চুল নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে, নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, দুশ্চিন্তামুক্ত জীবন যাপন করতে হবে, যেকোনো ওষুধ গ্রহণের আগে চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে, চুল নিয়ে অযথা টানাহেঁচড়া বন্ধ করতে হবে।

No comments:

Post a Comment