মেমরী কার্ড আজকাল প্রায়
নিত্য
প্রয়োজনীয় বস্তুতে পরিনত
হয়েছে।
আগে যেখানে অল্প কিছু
ইলেক্ট্রনিকস এর
দোকান ছাড়া এসব পাওয়াই দায়
ছিল,
সেখানে আজ আনাচে কানাচের সব
ডিভিডি মোবাইল
ফ্লেক্সীলোডের
দোকানেই মেমরী কার্ড
পাওয়া যায়।
এগুলোর মূল্যও আগের তুলনায়
অনেক
কমে গেছে। কিন্ত প্রশ্ন হচ্ছে,
এসব
মেমরী কার্ডের গুনগত মান
কতটুকু,
বা সেটি বোঝারও বা উপায় কি?
সেসব
প্রশ্ন নিয়েই আজকের এই লেখা।
যা যা জেনে নেয়া প্রয়োজন
১।
লাইফ-টাইম
সকল ব্র্যান্ডেড মেমরী কার্ডের
সাথে বলে দেয়া হয় “লাইফ-টাইম
গ্যারান্টী”। কিন্ত এই লাইফটাইম
গ্যারান্টীর অর্থ কি আমরা জানি?
অনেকেই মনে করছেন হয়ত
লাইফ-টাইম
মানে আজীবন যে কোনও সময়
সমস্যা হলেই
গ্যারান্টী পাওয়া যাবে, আর
লাইফ-টাইম
কথাটির মানেও তো আসলে তাই।
কিন্ত এই
জীবন সেই জীবন নয়,
তা মেমরী কার্ডের
প্যাকেজিং পড়লেই
বোঝা সম্ভব।
মেমরী কার্ড তৈরিতে ব্যবহার
করা হয়
ফ্ল্যাশ মেমরী সার্কিট। এসব
সার্কিট
থেকে কত বার ডাটা পড়া যাবে ও
ডাটা লেখা যাবে সেটির
একটি নির্দিষ্ট
পরিমাণ রয়েছে, কমদামীর
ক্ষেত্রে হয়ত
১০,০০০ বার আর বেশী দামীর
ক্ষেত্রে হয়ত ১০০,০০০ বার
বা ১,০০০,০০০ বার ও হতে পারে।
এই
রিড/রাইট সাইকেলের লিমিটকেই
ধরা হয়
মেমরী কার্ডটির লাইফ-টাইম।
অর্থাৎ,
গ্যারান্টী ততদিনই পাবেন যতদিন
এই
লাইফ-টাইম পার না হবে – অথচ
মজার
ব্যাপার হচ্ছে, এই লিমিটের পর
কার্ডটি এমনিও নষ্ট হয়ে যাবে,
তখন
দেখা যাবে কার্ড করাপ্ট আর
ফরম্যাট করাও
সম্ভব হচ্ছেনা।
এ ব্যাপারে যা দেখে কিনবেন
মেমরী কার্ডের
গ্যারান্টী না দেখে দেখা উচিৎ
সেটার
লাইফ-টাইম রিড-রাইট সাইকেল
কতবার।
যত বেশী হবে সেটী তত ভালো,
অন্তত
১০০,০০০ বার
না হলে সেটি কেনা উচিৎ
নয় (যদিনা আপনি কার্ডটি শুধু
ডাটা ব্যাকাপ রাখার
কাজে ব্যবহার
না করেন,
মানে ফোনে বা ট্যাবে লাগানো অবস্থায়
থাকবেনা)।
২। কার্ডটির ক্লাস
মেমরী কার্ডের ব্যবহারীক
সুবিধা অনেকটাই নির্ভর
করে সেটীর
রিড/রাইট স্পিডের ওপর। বিশেষ
করে ডিএসএলআর
ক্যামেরা বা হাই-
ডেফিনেশন ভিডিও করার সিস্টেম
সহ
ফোনের জন্য এটি একটা বড়
ব্যাপার।
তবে এই রিড-রাইট স্পিড বোঝার
সবচাইতে সহজ উপায়
হচ্ছে কার্ডটির
ক্লাস দেখে কেনা।
ক্লাসটি মেমরী কার্ডের
গায়ে @ এর মত করে লেখা থাকে।
ক্লাস ২ = ২মেগাবাইট
প্রতি সেকেন্ডে রাইট করা সম্ভব
ক্লাস ৪ = ৪মেগাবাইট
প্রতি সেকেন্ডে রাইট করা সম্ভব
ক্লাস ৬ = ৬মেগাবাইট
প্রতি সেকেন্ডে রাইট করা সম্ভব
ক্লাস ৮ = ৮মেগাবাইট
প্রতি সেকেন্ডে রাইট করা সম্ভব
ক্লাস ১০ = ১০মেগাবাইট
প্রতি সেকেন্ডে রাইট করা সম্ভব
ক্লাস U1 = ১০ মেগাবাইটের
ওপর
স্পিডে রাইট
করা যাবে প্রতি সেকেন্ডে
এইচডি ১০৮০পি ভিডিও রেকর্ড
করার
জন্য অন্তত ক্লাস ৬ কার্ড
কেনা উচিৎ।
তবে ৬ এর চাইতে ক্লাস ১০
বা ক্লাস U1
আরও
বেশী পাওয়া যাচ্ছে বাজারে।
(তবে নকল কার্ডের
গায়ে লেখা ক্লাস
সম্পূর্ণ ভুয়া। সেগুলো ২ বা ৪
ক্লাসের
বেশী নয়)
৩। কার্ডটির সত্যিকারের
নির্মাতা কে
মেমরী কার্ড
কিনতে গেলে ব্র্যান্ডের
অভাব পড়েনা। স্যামসাং, তোশিবা,
ট্র্যানসেন্ড, এ-ডাটা, এপ্যাসার,
স্যানডিস্ক, এমনকি কালাম
নামেও কার্ড
পাওয়া যায়। তবে কেনার সময় এই
বিষয়
বেশ সতর্কতা প্রয়োজন
SAMSUNG এর তৈরি কার্ড
বাংলাদেশে খুব
কম পাওয়া যায়। ৯০% ক্ষেত্রেই
নিম্মমানের কার্ড স্যামসাং এর
নামে বাজারজাত করে অসাধু
ব্যবসায়ীরা।
- তোশীবার কার্ড ও একই,
বেশীরভাগই
নকল কার্ড।
- স্যান ডিস্কের ক্ষেত্রেও
অনেকটাই এমন,
তবে U1 কার্ডগুলো নকল হবার
সম্ভাবনা কম।
ভালো নামী দোকান
থেকে কিনুন।
কার্ড কেনার সময় কার্ডের
গায়ে কোনও
হলোগ্রাম আছে কিনা দেখে নিন।
হলোগ্রামে যদি KALAM
শব্দটি চোখে পড়ে তাহলে বেশী দাম
দিয়ে কেনা থেকে বিরত থাকুন,
কেননা তা নকল ও নিম্মমানের
তবে অল্পকিছুদিন ব্যবহার করার
যোগ্য
(লাইফ-টাইম কম)।
ট্র্যানসেন্ড, এ-ডাটা বা এপ্যাসার
নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই,
এদের
কার্ড ওরিজিনাল প্রচুর
পাওয়া যায় ও
লাইফ-টাইম ও ১০০,০০০ বার এর
বেশী।
No comments:
Post a Comment